০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধুনিকতার ছোঁয়া দরকার শিক্ষাব্যবস্থায়: অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমে বাধায় বিরুপ প্রক্রিয়া

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০
  • ২৩ Time View

ইউজিসির ২৪ শে এপ্রিল ২০২০ অনলাইন পাঠদানের প্রজ্ঞাপনের জারীর সাথে সাথে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা পাঠদানের জন্য এই প্রক্রিয়াকে উত্তম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিল। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী শহর ছেড়ে গ্রামে তাদের নীজ নীজ বাড়ীতে চলে গেছে। তাই এই পন্থাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। অনলাইন পাঠদানের পদ্ধতিকে ইউজিসি বিনামূল্যে bdren থেকে zoom ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছিল, তবে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব কাস্টমাইজড অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম এবং শিক্ষাদান পদ্ধতিটি বিকাশ করতে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।

তবে গতকাল ইউজিসির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালইয়গুলোকে­ বাদ দিয়ে সকল পত্রিকায় প্রেরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইউজিসিঅনলাইনে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি সকল ভর্তি বন্ধকরার সুপারিশ করেছিল। এটি লক্ষণীয় যে বেশ কয়েকটি বিদেশীবিশ্ববিদ্যালয়­ বাংলাদেশে স্থানীয় ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকেঅনলাইনে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অনলাইনে ভর্তি বন্ধের এমন সিদ্ধান্তসকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ক্ষতির কারণ। বেশ কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২০০০ সালের শুরুর দিকে অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি গ্রহণ করেছিল যা পর্বরতীতে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়­ চালু করেছে। এত বছর পরে যখন ইউজিসি এই জাতীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞরা ইউজিসিকে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া থেকে বিচুত্যীত বলে মনে করে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

যখন এই বিজ্ঞপ্তিটি বিভিন্ন মিডিয়ায় আসে, তখন ফেসবুক এবংঅন্যান্য ওয়েব ২.০ প্রযুক্তিতে এই আদেশের বিরুদ্ধে মিস্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ রফিউদ্দিন আহমেদের করা একটি পোস্টে, সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববি­দ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর সরদানা খান মন্তব্য করেছিলেন যে, আমাদের স্থানীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সেকেলে মূল্যায়ন পদ্ধতির হেকে অনলাইন মূল্যায়ন পদ্ধতি আরও বেশি নির্ভরযোগ্য এবং নিরীক্ষণযোগ্য। কানাডার বাংলাদেশী শিক্ষাবিদরা ও ইউজিসির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে ইউজিসিকে নতুন প্রবণতা নিয়ে আপডেট থাকতে হবে এবং বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি মেনে চলতে হবে। বাংলাদেশের আরেকজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক জানিয়েছেন যে ইউজিসির এই পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশেনার পরিপন্থী।

এই পরিস্থিতিতে, সেমিস্টার জ্যাম এড়াতে এবং বিশেষত অবিচ্ছিন্ন শিক্ষণ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং মূল্যায়নসহ সকল প্রকারের শিক্ষা কার্জক্রম অনলাইনে থাকা প্রয়োজন।

জানতে চাইলে নর্দান ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. হুমায়ুন কবির বলেন, অনলাইনে ক্লাস সারা বিশ্বেইচলছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস নিয়ে নতুন প্রজন্মকে ব্যস্ত রাখছে। এতে করে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তারাপিছিয়ে যাচ্ছে না, নাহলে তারাও কিন্তু রাস্তায় ঘোরাফেরা করতো। এটা অবশ্যই একটা ভালো উদ্যোগ। তবে সমস্যাটা বাধিয়ে দিয়েছেদুই-তিনটা ইউনিভার্সিটি। এদের মধ্যে ব্র‍্যাক ইউনিভার্সিটি,এআইইউবি­ ও ইউআইইউ। এই তিনটি ইউনিভার্সিটি ঘোষণা দিলোমিড টার্মের উপর ভিত্তি করে ফাইনালে তারা শিক্ষার্থীদের গ্রেডিংদেবে। এটা কখনোই হতে পারে না। কারণ তারা অনলাইনে ক্লাস না নিয়েই এই ঘোষণাটা দিয়ে দিলো। গত পরশুদিন ডেইলি স্টারে একটা প্রতিবেদন আসছিলো ইউজিসি চেয়ারম্যানের। সেখানে তিনি বলেছেন, অনলাইনে ক্লাস না নিয়ে মিড টার্মের উপর ভিত্তি করে ফাইনালে গ্রেডিং দিয়ে দিলে এই সেক্টরে ডিজাস্টার সৃষ্টি হয়ে যাবে।ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. হুমায়ুন কবির মনে করেন এই জন্যই ইউজিসি চেয়ারম্যান চাননি এটা কেউ অনুকরণ করুক।

অনলাইন এডমিশনের ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ইউজিসি চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্টুডেন্ট রেভিনিউ দিয়েই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলে। এই রেভিনিউটা যদি হঠাৎ করে একটা সেমিস্টারে নিচে নেমে যায় তাহলে আমাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালানো কঠিন হবে। অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য যোগাযোগ করছে। কিন্তু ভর্তি নিতে গেলে তোতাকে টাকা পরিশোধ করা লাগবে। আর টাকা পরিশোধ করতে গেলেতাকে এই করোনা পরিস্থিতিতে বাইরে বের হতে হচ্ছে। এজন্য ইউজিসি বলছে কিছু সময়ের জন্য যেন ভর্তি বন্ধ রাখা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

আধুনিকতার ছোঁয়া দরকার শিক্ষাব্যবস্থায়: অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রমে বাধায় বিরুপ প্রক্রিয়া

Update Time : ০৪:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০

ইউজিসির ২৪ শে এপ্রিল ২০২০ অনলাইন পাঠদানের প্রজ্ঞাপনের জারীর সাথে সাথে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা পাঠদানের জন্য এই প্রক্রিয়াকে উত্তম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিল। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী শহর ছেড়ে গ্রামে তাদের নীজ নীজ বাড়ীতে চলে গেছে। তাই এই পন্থাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। অনলাইন পাঠদানের পদ্ধতিকে ইউজিসি বিনামূল্যে bdren থেকে zoom ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছিল, তবে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব কাস্টমাইজড অনলাইন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম এবং শিক্ষাদান পদ্ধতিটি বিকাশ করতে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।

তবে গতকাল ইউজিসির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালইয়গুলোকে­ বাদ দিয়ে সকল পত্রিকায় প্রেরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইউজিসিঅনলাইনে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি সকল ভর্তি বন্ধকরার সুপারিশ করেছিল। এটি লক্ষণীয় যে বেশ কয়েকটি বিদেশীবিশ্ববিদ্যালয়­ বাংলাদেশে স্থানীয় ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকেঅনলাইনে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। অনলাইনে ভর্তি বন্ধের এমন সিদ্ধান্তসকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ক্ষতির কারণ। বেশ কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ২০০০ সালের শুরুর দিকে অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি গ্রহণ করেছিল যা পর্বরতীতে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়­ চালু করেছে। এত বছর পরে যখন ইউজিসি এই জাতীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞরা ইউজিসিকে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া থেকে বিচুত্যীত বলে মনে করে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

যখন এই বিজ্ঞপ্তিটি বিভিন্ন মিডিয়ায় আসে, তখন ফেসবুক এবংঅন্যান্য ওয়েব ২.০ প্রযুক্তিতে এই আদেশের বিরুদ্ধে মিস্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ রফিউদ্দিন আহমেদের করা একটি পোস্টে, সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববি­দ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর সরদানা খান মন্তব্য করেছিলেন যে, আমাদের স্থানীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সেকেলে মূল্যায়ন পদ্ধতির হেকে অনলাইন মূল্যায়ন পদ্ধতি আরও বেশি নির্ভরযোগ্য এবং নিরীক্ষণযোগ্য। কানাডার বাংলাদেশী শিক্ষাবিদরা ও ইউজিসির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে ইউজিসিকে নতুন প্রবণতা নিয়ে আপডেট থাকতে হবে এবং বর্তমান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি মেনে চলতে হবে। বাংলাদেশের আরেকজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক জানিয়েছেন যে ইউজিসির এই পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশেনার পরিপন্থী।

এই পরিস্থিতিতে, সেমিস্টার জ্যাম এড়াতে এবং বিশেষত অবিচ্ছিন্ন শিক্ষণ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং মূল্যায়নসহ সকল প্রকারের শিক্ষা কার্জক্রম অনলাইনে থাকা প্রয়োজন।

জানতে চাইলে নর্দান ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. হুমায়ুন কবির বলেন, অনলাইনে ক্লাস সারা বিশ্বেইচলছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস নিয়ে নতুন প্রজন্মকে ব্যস্ত রাখছে। এতে করে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তারাপিছিয়ে যাচ্ছে না, নাহলে তারাও কিন্তু রাস্তায় ঘোরাফেরা করতো। এটা অবশ্যই একটা ভালো উদ্যোগ। তবে সমস্যাটা বাধিয়ে দিয়েছেদুই-তিনটা ইউনিভার্সিটি। এদের মধ্যে ব্র‍্যাক ইউনিভার্সিটি,এআইইউবি­ ও ইউআইইউ। এই তিনটি ইউনিভার্সিটি ঘোষণা দিলোমিড টার্মের উপর ভিত্তি করে ফাইনালে তারা শিক্ষার্থীদের গ্রেডিংদেবে। এটা কখনোই হতে পারে না। কারণ তারা অনলাইনে ক্লাস না নিয়েই এই ঘোষণাটা দিয়ে দিলো। গত পরশুদিন ডেইলি স্টারে একটা প্রতিবেদন আসছিলো ইউজিসি চেয়ারম্যানের। সেখানে তিনি বলেছেন, অনলাইনে ক্লাস না নিয়ে মিড টার্মের উপর ভিত্তি করে ফাইনালে গ্রেডিং দিয়ে দিলে এই সেক্টরে ডিজাস্টার সৃষ্টি হয়ে যাবে।ড. ইঞ্জিনিয়ার মো. হুমায়ুন কবির মনে করেন এই জন্যই ইউজিসি চেয়ারম্যান চাননি এটা কেউ অনুকরণ করুক।

অনলাইন এডমিশনের ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ইউজিসি চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্টুডেন্ট রেভিনিউ দিয়েই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলে। এই রেভিনিউটা যদি হঠাৎ করে একটা সেমিস্টারে নিচে নেমে যায় তাহলে আমাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালানো কঠিন হবে। অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য যোগাযোগ করছে। কিন্তু ভর্তি নিতে গেলে তোতাকে টাকা পরিশোধ করা লাগবে। আর টাকা পরিশোধ করতে গেলেতাকে এই করোনা পরিস্থিতিতে বাইরে বের হতে হচ্ছে। এজন্য ইউজিসি বলছে কিছু সময়ের জন্য যেন ভর্তি বন্ধ রাখা।