০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাসিমের করোনা নেগেটিভ দ্বিতীয় পরীক্ষায়, বিদেশে নেয়ার চেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০
  • ২০ Time View

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের দ্বিতীয় পরীক্ষায়ও করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। অর্থাৎ বর্ষীয়ান এ নেতার শরীরে এখন করোনার জীবাণু নেই। তবে তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, এখনও কোমায় আছে তিনি। এমতাবস্থায় নাসিমকে দেশের বাইরে নেয়ার একটা চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের কোভিড-১৯ টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। তার আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার যোগাযোগ চলছে।

এদিকে মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, উনার এখন কোভিড-১৯ বড় সমস্যা নয়। বড় বিষয় যেটি, সেটি হলো– ব্রেনস্ট্রোক। করোনা থেকে মোহাম্মদ নাসিম আরোগ্য লাভ করছিলেন। উনাকে আইসিইউ থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে মুহূর্তে ব্রেনস্ট্রোক করেন। এখনও উনার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।

নাসিমের করোনা টেস্ট নেগেটিভ এলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল সোমবারই। মোহাম্মদ নাসিমের ব্যক্তিগত সহকারী আশরাফুল আলম মিন্টু সোমবার বিকালে বলেন, স্যারের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। পুনরায় তার কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ টেস্ট করতে দেয়া হয়েছে। যদি টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ আসে তা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো হতে পারে।

এ বিষয়ে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ওনাকে দেশের বাইরে নেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও কিছুই জানি না। বর্তমান শারীরিক অবস্থায় তাকে দেশের বাইরে নেয়া সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাইলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নেয়া সম্ভব।

এর আগে রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

এর পর ৪ জুন তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি ম্যাসিভ ব্রেনস্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। এর পর ডিপ কোমায় চলে যান নাসিম। গত কয়দিনে তার স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি।

শনিবার মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

প্রাথমিকভাবে মোহাম্মদ নাসিমকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে ৭২ ঘণ্টা শেষে কোনো উন্নতি না হওয়ায একইভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। এখনও চিকিৎসকদের বিশেষ নজরদারিতে আছেন নাসিম।

সোমবার দুপুরে মোহাম্মদ নাসিমের নিবিড় পর্যবেক্ষণের ৭২ ঘণ্টা শেষ হয়। তবে তার অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণেই রাখা হয়েছে। সোমবার তার দ্বিতীয় বার করোনা টেস্ট করা হয়। মঙ্গলবার রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ আসে।

এদিকে নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সোমবার পুনর্গঠন করা হয়। এই বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- নিউরোলজিস্ট কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, নিউরোলজিস্ট বদরুল আলম, নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নারায়ন চন্দ্র কুণ্ডু, নিউরোসার্জন রাজিউল হক, কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মামুন মোস্তাফি এবং ওই হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. মোমেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নাসিমের করোনা নেগেটিভ দ্বিতীয় পরীক্ষায়, বিদেশে নেয়ার চেষ্টা

Update Time : ০৩:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুন ২০২০

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের দ্বিতীয় পরীক্ষায়ও করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। অর্থাৎ বর্ষীয়ান এ নেতার শরীরে এখন করোনার জীবাণু নেই। তবে তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, এখনও কোমায় আছে তিনি। এমতাবস্থায় নাসিমকে দেশের বাইরে নেয়ার একটা চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, মোহাম্মদ নাসিমের কোভিড-১৯ টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। তার আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার যোগাযোগ চলছে।

এদিকে মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, উনার এখন কোভিড-১৯ বড় সমস্যা নয়। বড় বিষয় যেটি, সেটি হলো– ব্রেনস্ট্রোক। করোনা থেকে মোহাম্মদ নাসিম আরোগ্য লাভ করছিলেন। উনাকে আইসিইউ থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে মুহূর্তে ব্রেনস্ট্রোক করেন। এখনও উনার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।

নাসিমের করোনা টেস্ট নেগেটিভ এলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল সোমবারই। মোহাম্মদ নাসিমের ব্যক্তিগত সহকারী আশরাফুল আলম মিন্টু সোমবার বিকালে বলেন, স্যারের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। পুনরায় তার কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ টেস্ট করতে দেয়া হয়েছে। যদি টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভ আসে তা হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো হতে পারে।

এ বিষয়ে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ওনাকে দেশের বাইরে নেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও কিছুই জানি না। বর্তমান শারীরিক অবস্থায় তাকে দেশের বাইরে নেয়া সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাইলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নেয়া সম্ভব।

এর আগে রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

এর পর ৪ জুন তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি ম্যাসিভ ব্রেনস্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। এর পর ডিপ কোমায় চলে যান নাসিম। গত কয়দিনে তার স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি।

শনিবার মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

প্রাথমিকভাবে মোহাম্মদ নাসিমকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে ৭২ ঘণ্টা শেষে কোনো উন্নতি না হওয়ায একইভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। এখনও চিকিৎসকদের বিশেষ নজরদারিতে আছেন নাসিম।

সোমবার দুপুরে মোহাম্মদ নাসিমের নিবিড় পর্যবেক্ষণের ৭২ ঘণ্টা শেষ হয়। তবে তার অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণেই রাখা হয়েছে। সোমবার তার দ্বিতীয় বার করোনা টেস্ট করা হয়। মঙ্গলবার রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ আসে।

এদিকে নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সোমবার পুনর্গঠন করা হয়। এই বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- নিউরোলজিস্ট কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, নিউরোলজিস্ট বদরুল আলম, নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নারায়ন চন্দ্র কুণ্ডু, নিউরোসার্জন রাজিউল হক, কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মামুন মোস্তাফি এবং ওই হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. মোমেন।